নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ মহামারি করোনাভাইরাসের মধ্যেই ঈদ আনন্দে জমে উঠেছে নগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলো। করোনার ভয়কে জয় করে ঈদের দিন বিকাল থেকে প্রায় প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্রে মানুষের ঢল নেমে আসে। করোনারকালে ঘরবন্দি অবস্থায় আটকে থাকা ভ্রমণ পিপাসু অধিকাংশ মানুষের মুখে ছিলো না মাস্ক কিংবা সুরক্ষা সামগ্রী। এমনকি স্বাস্থ্যবিধির ধার ধারতে দেখা যায়নি কাউকে। বিষয়টি দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ালেও প্রতিকারে দেখা যায়নি কার্যকর কোন উদ্যোগ।
সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, করোনার কারণে জনশূন্যতায় পরিণত হওয়া ভ্রমণ স্পটগুলোতে মানুষের ব্যাপক ভিড়। বিশেষ করে নগরীর ত্রিশ গোডাউন বধ্যভূমি এলাকা, বঙ্গবন্ধু উদ্যান, প্লানেট পার্ক, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, বিজয় বিহঙ্গ, কীর্তনখোলা নদীর শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতুসহ বিভিন্ন ভ্রমণ স্পটে মানুষের ঢল নামে। করোনা শুরুর পর এসব বিনোদন কেন্দ্রগুলো ছিল প্রায় জনশূন্য। এর ব্যতিক্রম চিত্র ফুটে ওঠে ঈদ উল আযহার গত দু’দিনে।
তবে ঈদের দিনের থেকেও পরদিন অর্থাৎ রোববার ২ আগস্ট প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্রেই মানুষের ভিড়ে তিল ধারণের ঠাঁই ছিলো না। সামাজিক দূরত্ব দূরের কথা বেশিরভাগ দর্শনার্থীর মুখেই ছিল না মাস্ক। ভ্রমণ স্পটের আশে পাশে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি দেখা গেলেও স্বাস্থ্যবিধি মানাতে দেখা যায়নি তাদের কোন তৎপরতা।
এদিকে শুধুমাত্র বিনোদন কেন্দ্রগুলোই নয়, তার আশপাশের প্রতিটি খাবারের দোকানেও মানুষের ভিড় দেখা যায়। এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচ্ছন্নতা নিয়েও প্রশ্নে তোলেন অনেকে। নগরীর কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী সিংগারা বিক্রেতা বশির বলেন, ‘ঈদে এতো বেশি মানুষের সামাগম ঘটবে তা ধারণা করতে পারিনি। মানুষের চাপের কারণে শৃঙ্খলা রক্ষা করা হচ্ছে না।
অপরদিকে দুই সন্তানকে নিয়ে ত্রিশ গোডাউন বধ্যভূমি এলাকায় ঘুরতে আসেন এক নারী। তাদের মুখে মাস্ক ছিল না। জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকদিন ঘরে থাকতে থাকতে অস্থির হয়ে গিয়েছি। তাই একটু স্বস্তি পেতে নদীর পারে ঘুরতে আসছি। মাস্ক আনতে মনে ছিল না। নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে ঘুরতে আসা আব্দুস সালাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেকের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা না থাকার কারণে করোনার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। বিষয়টি পরবর্তীতে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে প্রশাসনের কার্যকর উদ্যাগ গ্রহণের দাবি জানান তিনি। অপরদিকে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ‘ঈদের পূর্বে করোনা পরিস্থিতিতে নগরীর ছোট ছোট বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা গণমাধ্যমকে জানান প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কিন্তু ঈদের দিন থেকে প্রশাসনের সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবে রূপ নিতে দেখা যায়নি। শুধুমাত্র জেলা প্রশাসনের অধীনস্ত দুর্গাসাগরে প্রবেশ বন্ধ থাকলেও বাকি সকল বিনোদন কেন্দ্রই ছিল উন্মুক্ত।
Leave a Reply